গত বছরের ৫ জুলাই ছিল শুক্রবার। এদিন সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল সংক্রান্ত চার দফা দাবির ভিত্তিতে অনলাইন ও অফলাইনে জনসংযোগ কর্মসূচি পালন করেন ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের’ সমন্বয়করা। এই জনসংযোগ সারাদেশেই সমন্বিতভাবে চালানো হয়।
এর আগের দিন বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সন্ধ্যায় রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ প্রত্যাহারের আগে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের’ অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম তিন দিনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে বলেন, আগামীকাল (শুক্রবার) চার দফার ভিত্তিতে অনলাইন ও অফলাইনে আমাদের জনসংযোগ কর্মসূচি চলবে, এটা সারাদেশেই সমন্বিতভাবে করা হবে।
তিনি আরও বলেন, যেভাবে আমাদের চার দফা দাবিতে আন্দোলন চলছে, সেভাবেই তা চলতেই থাকবে। এখন পর্যন্ত নির্বাহী বিভাগ বা সরকারের কোনো দপ্তর থেকে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়নি এবং কোনোরকম আশ্বস্তও করেনি। এ জন্য দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের কর্মসূচি চলবেই।
তিন দিনের কর্মসূচি তুলে ধরে দিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, শুক্রবার (৫ জুলাই) চার দফা দাবির ভিত্তিতে অনলাইন ও অফলাইনে আমাদের জনসংযোগ কর্মসূচি চলবে।
শনিবার (৬ জুলাই) সব বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ থেকে বিকেল ৩টায় বিক্ষোভ মিছিল বের করা হবে। রোববার (৭ জুলাই) সব কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ক্লাস পরীক্ষা বর্জনের মতো ধর্মঘট পালন করা হবে।
আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আগামীকাল শুক্রবারেও আমাদের কর্মসূচি বন্ধ থাকবে না, আমরা অনলাইন ও অফলাইনে আমাদের চার দফা দাবিকেন্দ্রিক ব্যাপক প্রচারণা চালাবো। শনিবার বিক্ষোভ মিছিল ও রোববার সারাদেশের উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি পালন করবো আমরা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের কর্মসূচি চলবেই।
বিজ্ঞাপন
ইতোমধ্যে সমন্বয়কদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে কর্মসূচিগুলোতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ব্যাপক হারে সভা-সমাবেশে অংশগ্রহণ করতে থাকেন। এছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের প্রতিটি ব্যাচের শিক্ষার্থীরা ৪ থেকে ৫ জুলাইয়ের মধ্যে অভিন্ন বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের আহ্বানে একাত্মতা পোষণ করেন।
এটা দেশের প্রায় সকল বিশ্ববিদ্যালয়েও ব্যাপক সাড়া ফেলে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি ব্যাপক প্রচার হয়। কোন কোন বিভাগ ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেছে, ফেসবুকে তার হালনাগাদ তালিকা প্রকাশ করেন সমন্বয়করা।
এদিন সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা বাতিলের জারিকৃত সরকারি পরিপত্রের অংশবিশেষ অবৈধ ঘোষণা করে হাই কোর্টের দেওয়া রায়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপি-জামায়াতপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল। এক বিবৃতিতে সংগঠনটি শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের প্রতি সমর্থনও জানায়।
সূত্র: বাসস
Leave a Reply