ইরানে ইহুদিবাদী ইসরাইলের হামলার পরিপ্রেক্ষিতে আটকে পড়া বাংলাদেশীদের প্রথম দল তেহরান থেকে গতকাল স্থানীয় সময় দুপুরের পর স্থলপথে পাকিস্তানের দিকে যাত্রা শুরু করেছে। ৯০ জনের যে দলকে প্রথমে সরিয়ে আনার পরিকল্পনা করা হয়েছিল এ ২৯ সদস্য তাদেরই অংশ। ইরানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মনজুরুল করিম এ তথ্য দিয়েছেন। এদিকে দূতাবাস সূত্র থেকে জানা গেছে, ২৯ সদস্যের এ দলে দু-তিনজন কিডনির রোগী, ১০-১২ জন নারী এবং দুগ্ধপোষ্য শিশুসহ নানা বয়সের কয়েকজন শিশুও রয়েছে। দূতাবাসের প্রোটকল সহকারী ইরানি ইমামউমিদওয়ারী এবং আবদুল কাদির তাহির দেখাশোনার জন্য এ দলের সাথে রয়েছেন।
যাত্রার প্রথম পর্বে বাসে করে দলটি প্রায় ২০০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে ইরানের চাবাহার সীমান্তে পৌঁছাবে। প্রথম পর্বের যাত্রা ২৫ ঘণ্টার বেশি স্থায়ী হবে বলে মনে করা হচ্ছে। সীমান্ত অতিক্রম করে তারা পাকিস্তানের গ্যাবদে পৌঁছাবে। সেখানে প্রত্যাবর্তনকারী দলটির থাকার জন্য পাঁচ তারা হোটেলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। গ্যাবদ থেকে সড়ক পথে পাকিস্তানে গোয়াধার বন্দরে দলটি যাবে এবং সেখান থেকে জাহাজে করে তাদের বন্দরনগরী করাচিতে নিয়ে যাওয়া হবে। পাকিস্তান সরকার এ দলের সদস্যদের ভিসার বদলে ল্যান্ডিং ভিসা দিয়েছে, যাতে তারা ৭২ ঘণ্টা পাকিস্তানে কাটাতে পারবে। বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত জানান যে, প্রথম দলটি পাকিস্তানে পৌঁছানোর পর বাকি সদস্যদের স্বদেশে পাঠানোর বিকল্প পথ তারা খুঁজে দেখবেন। নয়া দিগন্তকে তিনি আরো জানান যে, ইরানের পরিবর্তনশীল পরিস্থিতির ওপর দূতাবাস নজর রাখছে। এক সপ্তাহের মধ্যে যদি বাণিজ্যিক বিমান চলাচল শুরু হয়ে যায় তা হলে হয়ত তৃতীয় দেশের মাধ্যমে আটকে পড়া বাংলাদেশীদের পাঠানোর প্রয়োজন আর থাকবে না। এ ছাড়া যদি ইরানের পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি ঘটে তা হলে হয়ত বাংলাদেশীদের স্বদেশে ফিরিয়ে আনার প্রয়োজনও ফুরিয়ে যাবে।
এদিকে ইরানের বৈদেশিক মুদ্রার বাজার এখনো চালু হয়নি। আগামী শনিবারের মধ্যে চালু হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। যুদ্ধের আগে এক ডলারের বিনিময়ে ৮৫ হাজার তুুমান পাওয়া গেলেও এখন তা বেড়ে ৯৬ হাজারে ঠেকেছে। ব্যবসা-বাণিজ্য ঠিকভাবে চালু হলে এই মার্কিন মুদ্রার বিনিময় মূল্য কী দাঁড়ায় তা বোঝা যাবে। ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পরপর ডলারের দাম বাড়তে বাড়তে এক লাখের ঘর পার হয়ে গিয়েছিল। এদিকে তৃতীয় দেশের মধ্যস্থতায় তেহরান এবং ওয়াশিংটনের মধ্যে আলোচনা শুরুর পর একদিনে ডলারের দাম প্রায় ২০ হাজার তুমান কমে ৮৬ হাজার তুমানে এসে ঠেকেছিল।
Leave a Reply