প্রতিবেদক: আরমান বিন আজাদ
ঢাকা, ১ জুন ২০২৫:
বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অনন্য মাইলফলক স্থাপিত হতে যাচ্ছে—প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচার কার্যক্রম সরাসরি সম্প্রচার করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে সরকার। স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে সংঘটিত রাজনৈতিক হত্যা, দমন-পীড়ন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলোর বিচার নিয়ে শুরু হতে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন এক গুরুত্বপূর্ণ মামলা, যা সরাসরি সম্প্রচারের মাধ্যমে জনসাধারণের সামনে উন্মোচিত হবে।
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের নির্দেশনায় গঠিত এই বিশেষ ট্রাইব্যুনালে আসামি হিসেবে নাম উঠে এসেছে খোদ শেখ হাসিনার, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের। এটি শুধু দেশের রাজনীতিতে নয়, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও এক বহুল আলোচিত অধ্যায়ের সূচনা করতে যাচ্ছে।
এই বিচার কার্যক্রমের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক হলো—এর সরাসরি সম্প্রচার। বিচারিক অনুমতি সাপেক্ষে শুধুমাত্র রাষ্ট্রীয় চ্যানেলেই নয়, অন্যান্য টেলিভিশন ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মেও এই বিচার সম্প্রচারের সুযোগ থাকবে। এই পদক্ষেপ বিচার ব্যবস্থার স্বচ্ছতা ও জনআস্থার দৃঢ় ভিত্তি নির্মাণে এক সাহসী ও সময়োপযোগী প্রয়াস।
বিশ্ব ইতিহাসে এরকম সরাসরি সম্প্রচারের নজির রয়েছে অন্তত ২১টি দেশের গুরুত্বপূর্ণ মামলার ক্ষেত্রে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়:
১. নুরেমবার্গ ট্রাইব্যুনাল (নাজি যুদ্ধাপরাধের বিচার)
২. ইরাকের সাবেক শাসক সাদ্দাম হোসেনের বিচার
৩. যুগোস্লাভিয়ার প্রেসিডেন্ট স্লোবোদান মিলোসেভিচের বিচার
৪. উগান্ডার কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী জোসেফ কোনির বিচার
৫. রুয়ান্ডার গণহত্যার বিচার
৬. রাশিয়ায় বিরোধীদলীয় নেতা আলেক্সেই নাভালনির বিচার
বিচার ব্যবস্থার জবাবদিহিতা, গতি এবং সাধারণ মানুষের তথ্য-অধিকার নিশ্চিত করতে এ সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এই উদ্যোগ বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার এবং আইনের শাসনের ক্ষেত্রে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারে।
Leave a Reply