যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়া ও ইউক্রেনকে বর্তমান যুদ্ধরেখাতেই সংঘাত থামানোর আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, উভয় পক্ষের উচিত ‘এই মুহূর্তে থামা, ঘরে ফেরা এবং হত্যা বন্ধ করা।’
ট্রাম্পের এই প্রস্তাবের অর্থ হবে ইউক্রেনের দোনবাসসহ বড় অংশের ভূখণ্ড নিজেদের দখলে রাখবে। সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে তিনি বলেন, ‘এখন তারা যুদ্ধের রেখায় থামুক, পরে বিস্তারিত বিষয় আলোচনায় আসবে।’
গত শুক্রবার ট্রাম্পের সঙ্গে হোয়াইট হাউসে বৈঠকে অংশ নেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। সেখানে ট্রাম্প ইউক্রেনকে কিছু অঞ্চল রাশিয়াকে ছেড়ে দিতে বলেন, যা প্রত্যাখ্যান করেন জেলেনস্কি। বৈঠকের পর ট্রাম্প বর্তমান সীমান্তে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেন।
দুই পক্ষের সূত্র জানিয়েছে, বৈঠকে ট্রাম্প দোনবাস অঞ্চলকে ‘এখন যেমনভাবে ভাগ হয়েছে, তেমনই রাখার’ কথা বলেন। তিনি দাবি করেন, রাশিয়া ইতোমধ্যেই দোনবাসের প্রায় ৭৮ শতাংশ দখল করে নিয়েছে। ‘ওই অবস্থাতেই রেখে দেওয়া হোক, পরে আলোচনা হতে পারে’, বলেন তিনি।
জেলেনস্কি দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র চাইছেন, যাতে রাশিয়ার গভীরে আঘাত হানা যায়। কিন্তু এই অনুরোধে সাড়া দেননি ট্রাম্প। মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স জানিয়েছেন, টমাহক সরবরাহের বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
সূত্রগুলো জানায়, বৈঠকের আগে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্পের ফোনালাপে সম্ভাব্য ভূমি বিনিময় নিয়ে আলোচনা হয়। পুতিন প্রস্তাব দেন, ইউক্রেন দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চল ছাড়লে রাশিয়া জাপোরিঝিয়া ও খেরসনের কিছু অংশ থেকে সেনা প্রত্যাহার করবে।
ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফও ইউক্রেনীয় প্রতিনিধি দলকে এই প্রস্তাবে রাজি করানোর চেষ্টা করেন। তবে ইউক্রেনীয় পক্ষ এটিকে দেশের জন্য ‘আত্মঘাতী’ সিদ্ধান্ত হিসেবে অভিহিত করে প্রত্যাখ্যান করে।
এর আগে সেপ্টেম্বর মাসে ট্রাম্প বলেছিলেন, ইউক্রেন চাইলে রাশিয়ার দখল করা সব ভূখণ্ডই পুনরুদ্ধার করতে পারবে। কিন্তু সাম্প্রতিক বৈঠক ও মন্তব্যে তিনি স্পষ্টতই দ্রুত একটি ‘চুক্তি’র দিকে ঝুঁকছেন।
জেলেনস্কি পরে বলেন, রুশ আগ্রাসনের মুখে ইউক্রেন কোনো ভূখণ্ড ছাড় দেবে না। তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের মিত্রদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘অপরাধীদের কোনো পুরস্কার দেওয়া যাবে না।’ খবর দ্য গার্ডিয়ান, রয়টার্স ও আলজাজিরার।
Leave a Reply