সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ইসলাম ধর্মের দ্বিতীয় খলিফা হযরত উমর (রা.) এবং সাহাবি হযরত মুয়াবি (রা.) নিয়ে কূরুচিপূর্ণ স্ট্যাটাসের অভিযোগে মৌলভীবাজারে উমায়রা ইসলাম নামে এক নারী আইনজীবীকে আটক করেছে মৌলভীবাজার সদর মডেল থানা পুলিশ। শনিবার (২৮ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় মৌলভীবাজার শহরের ক্লাব রোডের তার বাসা থেকে আটক করে পুলিশ।
পুলিশ বলছে, নবীজীর সাহাবীদের নিয়ে ওই নারী আইনজীবী তার নিজের ফেসবুক আইডিতে এমন কটূক্তিমূলক পোস্ট দেন। তাকে কূরুচিপূর্ণ স্ট্যাটাসের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে উমায়রা ইসলাম তার ফেসবুক আইডিতে মহানবী (সা.) ও হযরত উমর (রা.) সাহাবায়ে কেরাম নিয়ে কটূক্তি, কুরুচিপূর্ণ স্ট্যাটাসসহ ইসলাম এবং আলেম-উলামা বিদ্বেষী বিভিন্ন লেখালেখি করে আসছেন।
শনিবার খলিফাতুল মুসলিমীন হজর উমর (রা.) ও সাহাবি আমিরে মুয়াবি (রা.) নিয়ে কুরুচিপূর্ণ ভাষার একটি পোস্ট তার নিজের ফেসবুক আইডিতে দিলে অনেক ধর্মপ্রাণ মানুষের দৃষ্টিগোচর হয়। বিষয়টি মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত হানে। এরই প্রেক্ষিতে জোরালো দাবি উঠে অভিযুক্ত নারীকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির।
মৌলভীবাজার মুসলিম কমিউনিটি, জেলার আলেম-ওলামা, সর্বদলীয় ইসলামী সংগ্রাম পরিষদের নেতৃবৃন্দসহ ধর্মপ্রাণ ছাত্র-জনতা সোচ্চার হয়ে উঠেন ওই আইনজীবীকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে। অবশেষে নবী-সাহাবি নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে উময়ারা ইসলামকে পুলিশ আটক করে মডেল থানা হেফাজতে নিয়ে আসে।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ওই নারীর বিরুদ্ধে কোনো মামলা হয়নি এবং পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার দেখায়নি। এদিকে মৌলভীবাজার মডেল থানার সামনে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ব্যাপক উপস্থিতি ও ক্ষোভ বাড়ছে। আলেম উলামা ও স্থানীয় ধর্মপ্রাণ ছাত্র-জনতার দাবি অভিযুক্ত নারীকে গ্রেপ্তার করে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
মৌলভীবাজার সদর মডেল এ বিষয়ে মডেল থানার ওসি গাজী মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ফেসবুকে নবীর সাহাবীদের নিয়ে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে এক নারীকে আটক করে পুলিশি হেফাজতে আনা হয়েছে। এ বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
নাজমুল হোসেন শান্তর অধিনায়কত্ব নিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেটে হয়ে গেলো আরেক নাটক। এর আগে তিন ফরম্যাটেরই নেতৃত্ব ছাড়তে চেয়েছিলেন শান্ত। কিন্তু বিসিবি তাকে বুঝিয়ে-শুনিয়ে ওয়ানডে আর টেস্টে অধিনায়ক রাখে।
এর মধ্যে সম্প্রতি হুট করে ওয়ানডের নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে শান্তকে। নতুন অধিনায়ক করা হয়েছে মেহেদী হাসান মিরাজকে।
টি-টোয়েন্টিতে লিটন দাস, ওয়ানডেতে মেহেদী হাসান মিরাজ আর টেস্টে নাজমুল হোসেন শান্ত; তিন ফরম্যাটে তিন অধিনায়ক তত্ত্বে ফিরে গিয়েছিল বিসিবি।
এরই মধ্যে টেস্টের নেতৃত্ব ছাড়ার ঘোষণা দিলেন শান্ত। হুট করে ওয়ানডের নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ায় অভিমানে টেস্টের অধিনায়কত্বও ছাড়তে পারেন, এমনটা শোনা গিয়েছিল আগেই। তবে সংবাদ সম্মেলনে শান্ত সেটি স্বীকার করলেন না। বললেন, ব্যক্তিগত বিষয় নয়, দলের ভালোর জন্যই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে শান্ত বলেন, ‘আমি বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক পদ থেকে সরে দাঁড়াচ্ছি। আমি টেস্ট ফরম্যাটে আর এই দায়িত্ব পালন করতে চাই না। আমি সবাইকে পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, এটা ব্যক্তিগত কোনো কিছু নয়। পুরোপুরি দলের ভালোর জন্য আমি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবং আমি মনে করি এটাতে দলের ভালো কিছুই হবে।’
শান্তর মতে, তিন ফরম্যাটে তিন অধিনায়ক দলের জন্য সমস্যা করতে পারে। তাই তো তার এমন কথা, ‘এই ড্রেসিংরুমে গত কয়েক বছর ধরে, লম্বা সময় ধরে আমার থাকার সুযোগ হয়েছে। এটা আমার ব্যক্তিগত মতামত যে তিনজন অধিনায়ক দলের জন্য সমস্যা হতে পারে। দলের ভালোর জন্য এখান থেকে সরে আসছি। যদি ক্রিকেট বোর্ড মনে করে যে, তিনটা অধিনায়কই রাখবে, এটা তাদের সিদ্ধান্ত।’
এরপর শান্ত যোগ করেন, ‘আমি আশা করব, কেউ যেন এরকম না মনে করে যে আমি ব্যক্তিগত কোনো কারণে বা রাগ থেকে সিদ্ধান্তটা নিয়েছি। এটা দলের ভালোর জন্য, এখানে ব্যক্তিগত কিছু নেই।’
রাজধানীর ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী আনিসা আরিফা, যিনি মায়ের হঠাৎ অসুস্থতায় এইচএসসির প্রথম দিনের পরীক্ষা সময়মতো কেন্দ্রে পৌঁছাতে পারেননি, তিনি রবিবার (২৯ জুন) বাংলা দ্বিতীয়পত্র পরীক্ষায় অংশ নিতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
প্রথম দিনে পরীক্ষায় অংশ নিতে না পারলেও আনিসা সকল বাধা বিপত্তি পার করে মায়ের পাশে দাঁড়িয়ে তার পরীক্ষা মিস করেছেন। এরপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার এই ঘটনা ব্যাপকভাবে ভাইরাল হয়েছে।
শিক্ষার্থী আনিসা জানান, বাংলা দ্বিতীয়পত্রের জন্য যথাসময়ে প্রস্তুতি নিয়ে কেন্দ্রে গিয়ে পরীক্ষায় অংশ নিবেন। একই কথা জানিয়েছেন তার মা, মুসলিমা আহমেদ সুবর্ণা এবং কলেজের অধ্যক্ষ মো. আসাদুজ্জামান।
আনিসার মা সুবর্ণা বলেন, “আমি এখন অনেকটা সুস্থ আছি এবং আমার মেয়ে আগামীকাল (রোববার) পরীক্ষায় অংশ নেবে।” তিনি আরও জানান, গত বৃহস্পতিবার হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে মিরপুর-১৩ নম্বরে সেলিনা ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছিল। চিকিৎসা শেষে রাতে বাসায় ফিরেছেন।
কলেজের অধ্যক্ষ মো. আসাদুজ্জামান বলেন, “ঘটনার পর আমরা আনিসার বাসায় সহকারী অধ্যাপক কামরুল ইসলাম পাঠিয়েছিলাম। তিনি গিয়ে খোঁজখবর নেন। আনিসা জানিয়েছেন, সে পরবর্তী পরীক্ষাগুলোতে সময়মতো কেন্দ্রে যাবে।”
এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা বোর্ডের সঙ্গে কলেজ কর্তৃপক্ষের কোনো যোগাযোগ ছিল কি না জানতে চাইলে অধ্যক্ষ জানান, “ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন।”
প্রসঙ্গত, গত ২৬ জুন সকাল ১০টায় সারা দেশে একযোগে শুরু হয়েছে ২০২৫ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা। এবার ২ হাজার ৭৯৭টি কেন্দ্রে প্রায় ১২ লাখ ৫১ হাজার শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করছে। প্রথম দিনের বাংলা প্রথম পত্র পরীক্ষায় ১৯ হাজার ৭৫৯ জন অনুপস্থিত ছিল, এবং ৪৩ জন শিক্ষার্থী শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে বহিষ্কার হয়েছে। পরীক্ষা চলবে ১০ আগস্ট পর্যন্ত, এবং ব্যবহারিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ১১ থেকে ২১ আগস্ট।
মার্চ মাসে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী এমন একটি যুদ্ধবিরতির প্রক্রিয়া থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন যেটি সুফল বয়ে আনছিল। তার এই সিদ্ধান্তকে ওই সময় ‘রাজনৈতিক আত্মহত্যা’ বলে বর্ণনা করেছিলেন কোনো কোনো বিশ্লেষক।
এটি ছিল গাজা যুদ্ধবিরতি।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা নেওয়ার আগেই তার দূত স্টিভ উইটকফের মধ্যস্থতায় গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি সম্ভব হয় এবং হামাসের বন্দিদশা থেকে কয়েক ডজন জিম্মি মুক্তি পায়, যার বিনিময়ে ইসরায়েলি কারাগার থেকে শত শত ফিলিস্তিনি বন্দিকেও মুক্তি দেওয়া হয়।
পরবর্তী পর্যায়ে আরও জিম্মিকে দেশে ফিরিয়ে আনা এবং আলোচনার মাধ্যমে যুদ্ধের সমাপ্তির আগে গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনাদের ধীরে ধীরে প্রত্যাহার করার কথা ছিল।
সংঘাতে ক্লান্ত ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিরা সাম্প্রতিক ইতিহাসের সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক যুদ্ধের সমাপ্তির কথা ভাবছিল। কিন্তু যুদ্ধ শেষ করতে চাননি নেতানিয়াহু।
তিনি গাজাজুড়ে আবার আক্রমণ শুরু করার নির্দেশ দেওয়ার সময় বলেছিলেন, হামাস “সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস না হওয়া পর্যন্ত” লড়াই চলবে।
গাজায় অবশিষ্ট জিম্মিদের নিরাপদে প্রত্যাবর্তনকে একটি গৌণ বিষয় বলে মনে হয়েছিল তখন। (গাজায় বেসামরিক নাগরিকদের ওপর যে প্রভাব পড়েছে তা বিবেচনাতেই নেওয়া হয়নি)
অনেক ইসরায়েলি, বিশেষ করে জিম্মিদের পরিবারগুলো এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানায়।
তারা নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন যে তিনি তাদের স্বজনদের (যারা জিম্মি আছে) নিরাপত্তা এবং জাতির বৃহত্তর কল্যাণের চেয়ে নিজের রাজনৈতিক অস্তিত্বকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন।
জরিপে দেখা গেছে, “বিবির” (নেতানিয়াহু এই নামেও পরিচিত) জনপ্রিয়তা হ্রাস পেয়েছে এবং তিনি অতি-ডানপন্থি এবং তিনি গোঁড়া ধর্মীয় দলগুলোর কট্টর মন্ত্রীদের দ্বারা পরিচালিত একটি বিচ্ছিন্ন সরকারকে একত্রিত করতে লড়াই করছেন।
তিন মাস পর, নেতানিয়াহু তার শত্রুপক্ষ ইরানের বিরুদ্ধে এক অসাধারণ সামরিক বিজয়ের দাবির ওপর ভাসছেন। জানা গেছে, তিনি এখন আগাম নির্বাচন দেওয়া এবং প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আরও একটি মেয়াদের কথা ভাবছেন।
গত সপ্তাহের শুরুতে এক সংবাদ সম্মেলনে, ৭৫ বছর বয়সী এই নেতা, যিনি ইতোমধ্যেই ইসরায়েলের সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদী প্রধানমন্ত্রী, তিনি বলেছেন যে তার এখনো “অনেক মিশন” সম্পন্ন করা বাকি আছে এবং যতদিন ইসরায়েলের ‘জনগণ’ তাকে চাইবে ততদিন তিনি তা করতে চাইবেন।
সপ্তাহের শেষের দিকে এসে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ধ্বংস করে দেওয়ার (যেটি এখনো নিশ্চিত নয়) দাবিকে একটি ‘সুযোগের জানালা’ হিসেবে উপস্থাপন করেন তিনি। এই সুযোগ “হাতছাড়া করা উচিত নয়” এবং কেবল তিনিই গাজা থেকে “জিম্মিদের মুক্ত করা এবং হামাসের পরাজয়” নিশ্চিত করতে পারবেন বলেও উল্লেখ করেছেন। বৃহত্তর আঞ্চলিক ঐকমত্যের ভিত্তিতেই এগুলো করতে পারবে বলে তিনি যুক্তি দেন।
কিন্তু আগাম নির্বাচন আহ্বান করা একটি বড় ঝুঁকি হবে এবং সাম্প্রতিক জরিপ অনুসারে, নেতানিয়াহু ইরানের সাথে ১২ দিনের সংঘাত থেকে জনপ্রিয়তায় যতটা ‘উল্লম্ফন’ আশা করেছিলেন ততটা উপভোগ করতে পারেননি।
‘বিশ্বাস’
ইসরায়েলের মা’আরিভ সংবাদপত্রে এই জরিপের ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
এতে বলা হয়, ইসরায়েলি পার্লামেন্ট বা নেসেটের ১২০টি আসনে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য জোট গঠন গুরুত্বপূর্ণ। আর বিদ্যমান ভঙ্গুর রাজনৈতিক ব্যবস্থায় নেতানিয়াহুর লিকুদ পার্টি এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে যথেষ্ট পিছিয়ে থাকবে এবং ডানপন্থি ছোট দলগুলোর সমর্থন পেতে তাদের যথেষ্ট বেগ পেতে হতে পারে।
একই জরিপে উল্লেখযোগ্য সংখ্যাগরিষ্ঠতা দেখানো হয়েছে যেখানে ৫৯ শতাংশ ইসরায়েলি চান যে জিম্মিদের বিনিময়ে গাজায় যুদ্ধ এখনই বন্ধ হোক।
উত্তরদাতাদের প্রায় অর্ধেক, প্রায় ৪৯ শতাংশ মনে করেছেন যে নেতানিয়াহু যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার একমাত্র কারণ তার নিজস্ব রাজনৈতিক বিবেচনা।
“লোকটি একজন অত্যন্ত দক্ষ রাজনৈতিক অভিনেতা,” বলেন ইসরায়েল ডেমোক্রেসি ইনস্টিটিউটের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো অধ্যাপক তামার হারম্যান। তিনি এটাও যোগ করেন, “ইসরায়েলে তার চেয়ে দক্ষ রাজনীতিবিদ আর কেউ নেই।”
কিন্তু তিনি এটাও বলেন, “বিশ্বাস” নেতানিয়াহুর জন্য একটি বড় সমস্যা।
ক্ষমতার লাগাম আঁকড়ে ধরার জন্য এত বার নিজের অবস্থান পরিবর্তন করেছেন এমন একজন রাজনৈতিক নেতাকে বেশিরভাগ ইসরায়েলিরা আর বিশ্বাস করে না।
অধ্যাপক হারম্যানের ইসরায়েল ডেমোক্রেসি ইনস্টিটিউট শিগগিরই প্রকাশ করবে এমন এক নতুন জরিপের তথ্য হলো, নেতানিয়াহু “ইসরায়েলিদের পূর্ণ বা আংশিক আস্থা অর্জনের ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশের সীমা অতিক্রম করেননি”।
এই তথ্য জানিয়ে অধ্যাপক হারম্যান বলেন, কিছু দিক থেকে আগাম নির্বাচনের ঘোষণা “ইরান আক্রমণের চেয়েও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ (নেতানিয়াহুর জন্য), কারণ মধ্যপ্রাচ্যে আপনি সত্যিই জানেন না যে ছয় মাসের মধ্যে আপনি কোথায় থাকবেন।”
কারণ, ইরানে তার সামরিক জুয়াখেলা আপাতদৃষ্টিতে সফল মনে হলেও নেতানিয়াহুর বসার ঘরের কোণে একটি হাতি রয়েছে।
প্রকৃতপক্ষে, আপনি বলতে পারেন যে হাতিদের ছোট একটি দল তার আরও একটি মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার আশাকে মাড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে।
দুর্নীতির অভিযোগ
নেতানিয়াহু আগামী সপ্তাহে ইসরায়েলের আদালতে একটি হাই-প্রোফাইল ফৌজদারি মামলায় সাক্ষ্য দেবেন যেখানে তিনি ঘুষ ও জালিয়াতির অভিযোগের মুখোমুখি হচ্ছেন।
প্রধানমন্ত্রীর ব্যস্ত সময়সূচি এবং (ইরান যুদ্ধের সময়) বিশেষ জরুরি অবস্থার কারণে হাইকোর্টে তার শুনানি বিলম্বিত করার প্রচেষ্টা গত সপ্তাহের শেষে প্রত্যাখ্যাত হয়েছিল।
নেতানিয়াহু এবং তার সমর্থকরা বারবার তার বিরুদ্ধে আইনি মামলাটিকে ‘রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ হিসেবে চিত্রিত করার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু দেশটিতে ক্রমাগত মেরুকরণ বাড়ছে এবং তার বিরোধীরা আরও জোরালো দাবি তুলছেন যে তাকে বিচারের মুখোমুখি করা উচিত।
“বিবির” আইনি ঝামেলা সম্পর্কে দেরিতে জানতে পেরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, নেতানিয়াহু একজন “মহান নায়ক” এবং “যোদ্ধা” যার বিচার “অবিলম্বে বাতিল” করা উচিত অথবা, অন্ততপক্ষে তাকে ক্ষমা করা উচিত।
এখানে মনে রাখা উচিত, এই একই মার্কিন প্রেসিডেন্ট মাত্র কয়েকদিন আগে প্রকাশ্যে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীকে অপমানজনকভাবে নিন্দা করেছিলেন, কারণ ইরান যুদ্ধবিরতি চুক্তি শুরু হওয়ার আগেই তা ভেঙে যাওয়ার হুমকি দিয়েছিল।
কিন্তু নেতানিয়াহুর বিচারের বিষয়ে ট্রাম্পের সাম্প্রতিক হস্তক্ষেপকে ইসরায়েলের অনেকেই ‘অযৌক্তিক’ এবং ‘অকেজো’ বলে বর্ণনা করেছেন।
বিরোধীদলীয় নেতা ইয়ার ল্যাপিদ বলেছেন যে ট্রাম্পের “একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের আইনি প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়”।
অধ্যাপক হারম্যান বলেন, ইসরায়েলের প্রতি ট্রাম্পের স্পষ্টতই পরস্পরবিরোধী অবস্থান এবং নেতানিয়াহুর আইনি মামলায় হস্তক্ষেপের চেষ্টা “আমাদের সাথে একটি ব্যানানা রিপাবলিকের মতো (এমন একটি দুর্বল, দুর্নীতিগ্রস্ত ও অস্থিতিশীল দেশকে বোঝাতে এই শব্দ দুটি ব্যবহার করা হয় যেটি আর্থসামাজিকভাবে অন্য বিদেশি প্রভাবশালী শক্তির ওপর নির্ভর করে) আচরণ করার” শামিল।
অনেক ইসরায়েলির অভিযোগ, নেতানিয়াহু গাজায় যুদ্ধকে অপ্রয়োজনীয়ভাবে দীর্ঘায়িত করে ইসরায়েলের বৈশ্বিক অবস্থান এবং এর অর্থনৈতিক সম্ভাবনার ক্ষতি করছেন। যদিও অনেক প্রাক্তন জেনারেল বলেছেন যে ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী বা আইডিএফ গাজায় সামরিকভাবে যতটা সফলতা পাওয়া সম্ভব ততটাই অর্জন করেছে।
নেতানিয়াহু এবং গ্যালান্টের সাথে ইসরায়েলের সরকার দৃঢ়ভাবে অভিযোগগুলো প্রত্যাখ্যান করে আসছে।
বেশিরভাগ ভাষ্যকারের মতে, গাজায় যুদ্ধ চলতে থাকা এবং ইসরায়েলি জিম্মিদের বন্দি অবস্থায় ইসরায়েলে নতুন নির্বাচনের কথা কল্পনা করা কঠিন হবে।
কিন্তু নেতানিয়াহুর অনেক সমালোচক এবং বিরোধী বছরের পর বছর ধরে তাকে অকালমৃত্যুর মুখোমুখি করেছেন এবং অবশ্যই তার পরবর্তী পদক্ষেপ কী হতে পারে তা কখনই অনুমান করতে পারছেন না।
বিএনপি সরকারে গেলে ১৮ মাসে ১ কোটি মানুষের কর্মসংস্থান করবে বলে মন্তব্য করেছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ। তিনি বলেছেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেবে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে। ন্যূনতম এসএসসি পাস তরুণ-যুবকদের আইটি খাতে চাকরি দেওয়া হবে।
আজ শনিবার (২৮ জুন) সকালে সিলেট বিজনেস ডায়ালগ অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্যে এসব বলেন তিনি। সিলেট ও জাতীয় অর্থনীতির বর্তমান চ্যালেঞ্জ, সম্ভাবনা ও সম্মিলিত অগ্রগতির রূপরেখা নিয়ে বিজনেস ডায়ালগ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তিনি।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘ব্যবসাকে রাজনীতির বাইরে রাখতে হবে, ফ্যাসিস্ট মুক্ত করতে হবে। ক্ষমতায় গেলে প্রথমদিন থেকেই ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়নে বিএনপি সরকার কাজ করবে। একদিনও দেরি হবে না।’
তিনি উল্লেখ করেন, যারা কৃষিতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী তাদের সে সুযোগ তৈরি করে দেওয়া হবে। কৃষিপণ্য বিদেশে রপ্তানির লক্ষ্যেও বিএনপি কাজ করবে।
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে অর্থনীতি নিয়ে যে সৃজনশীলতা ছিল তা গেল ১৭ বছরে ধ্বংস করা হয়েছে। আগের মত রাজনীতি করলে আর হবে না, বাংলাদেশের মানুষের মনমানসিকতা পরিবর্তন হয়েছে। ব্যবসাকে রাজনীতির বাইরে রাখতে হবে, তবে ফ্যাসিস্টমুক্ত করতে হবে।’
‘তারেক রহমান আওয়ামী ফ্যসিবাদবিরোধী গণঅভ্যুত্থানের সফল রূপকার’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু ও সিবেব সভাপতি ফজলুল হক।
এ ছাড়া অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী, মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদীসহ শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশে মূলধারার সংবাদমাধ্যমগুলোর মধ্যেও ভুয়া (ফেইক) সংবাদ প্রকাশ ও পরে তা প্রত্যাহারের ঘটনা ক্রমবর্ধমান। সম্প্রতি প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ (পিআইবি) আয়োজিত এক সেমিনারে প্রকাশিত গবেষণায় দেখা গেছে, এই তালিকায় শীর্ষে রয়েছে দৈনিক প্রথম আলো।
শনিবার (২৮ জুন) সকালে পিআইবি আয়োজিত এক সেমিনারে মামুন অর রশীদের গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। তিনি বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের গবেষণা ও উন্নয়নের মাধ্যমে তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলা ভাষা সমৃদ্ধকরণ (ইবিএলআইসিটি) প্রকল্পের পরামর্শক।
তার গবেষণার শিরোনাম ছিল ‘বাংলাদেশের গণমাধ্যমর সাম্প্রতিক অপতথ্যের গতি-প্রকৃতি’।
এতে জানানো হয়, গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর থেকে মূলধারার সংবাদমাধ্যমগুলোতেও ভুয়া সংবাদের প্রবণতা বেড়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই বস্তুনিষ্ঠতা নয়, বরং ভাইরাল হওয়ার লোভেই সংবাদ পরিবেশিত হচ্ছে।
গবেষণা অনুযায়ী, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংবাদ প্রত্যাহার করতে হয়েছে প্রথম আলোকে।
দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে দৈনিক কালবেলা এবং তৃতীয় অবস্থানে দৈনিক ইত্তেফাক।
গবেষক মামুন অর রশীদ জানান, এই গবেষণাটি তার নিজস্ব উদ্যোগে সম্পন্ন হয়েছে এবং এটি এখনো হালনাগাদের প্রক্রিয়ায় রয়েছে। তিনি ৬ মাসের ফ্যাক্ট-চেক স্ক্র্যাপডেটা বিশ্লেষণ, ৬৯৪টি ডেডলিংক সংবাদ এবং ৫টি নির্ধারিত গবেষণা পদ্ধতির ভিত্তিতে কাজটি করেছেন।
সেমিনারের প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহম্মদ তৈয়্যব আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, সামনে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের সময় বাংলাদেশে ইতিহাসের সর্বোচ্চ ভুয়া তথ্য ছড়াতে দেখা যেতে পারে।
তিনি বলেন, ‘বানোয়াট ও চাঞ্চল্যকর তথ্য মানুষ বেশি পড়েন; গণমাধ্যমগুলো অনেক সময় ইচ্ছাকৃতভাবে এমন খবর ছড়ায় শুধু আর্থিক লাভের আশায়।’
তিনি আরো বলেন, সামাজিক মাধ্যমে এখন আওয়ামী লীগের উপস্থিতি বেড়েছে, যা বিএনপির তুলনায় দ্বিগুণ।
সেমিনারে আলোচনায় অংশ নেন আমার দেশের চিফ রিপোর্টার বাছির জামাল, প্রথমা প্রকাশনার প্রধান সমন্বয়কারী মশিউল আলম, একাত্তর টিভির সিওও শফিক আহমেদ, যুগান্তরের নগর সম্পাদক মিজান মালিক ও যমুনা টিভির মাহফুজ মিশু। সেমিনারটি পরিচালনা করেন পিআইবির জ্যেষ্ঠ গবেষণা কর্মকর্তা গোলাম মোর্শেদ।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেছেন, দেশের ইসলামি দলগুলো আগামী দিনের প্রধান রাজনৈতিক শক্তি হয়ে উঠবে।
শনিবার (২৮ জুন) বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত এক মহাসমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন। তিন দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এই সমাবেশের আয়োজন করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।
চরমোনাই পীর বলেন, ইসলামপন্থিদের ঐক্যের ব্যাপারে এখন গণ-আকাঙ্ক্ষা সৃষ্টি হয়েছে। জোটবদ্ধ ইসলামি দলগুলোই হবে আগামী দিনের রাজনৈতিক নেতৃত্বের মূল শক্তি।
তিনি বলেন, পিআর পদ্ধতি ছাড়া নির্বাচন আয়োজনের আর কোনো বিকল্প নেই। জনগণের ভোটের সঠিক মূল্যায়ন নিশ্চিত করতে হলে সংসদ নির্বাচনে পিআর পদ্ধতি চালু করতেই হবে।
তিনি আরও বলেন, সংস্কারের প্রশ্নে আমরা অটল ও অবিচল। এই সংস্কারে কালক্ষেপণ মানেই ২০২৪ সালের গণ-আন্দোলনের সঙ্গে বেইমানি। ১৯৭২ সালের সংবিধান তখনকার জনগণের আকাঙ্ক্ষা বিবেচনায় নেয়নি, সেটি ছিল বধির।
সমাবেশে দলের সিনিয়র নায়েবে আমির সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেন, আগামী নির্বাচনে কোনো দল নয়, ক্ষমতায় যাবে ইসলাম।
তিনি বলেন, ২০২৪-এ বাংলাদেশের মানুষ কর্তৃত্ববাদী শাসনের জন্য জীবন দেয়নি। বাংলাদেশের জনগণ ভবিষ্যতে আর কোনো চাঁদাবাজ বা দুর্নীতিবাজকে সংসদে পাঠাবে না।
সমাবেশে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত নেতাকর্মীদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। বক্তারা নির্বাচন পদ্ধতির সংস্কার, দুর্নীতিমুক্ত রাজনীতি ও ইসলামী মূল্যবোধের প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ থেকে স্থলবন্দর দিয়ে নয় ধরনের পণ্য আমদানিতে ভারতের নতুন নিষেধাজ্ঞার পর দেশটিতে বাংলাদেশের পণ্য রফতানি নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
বিশেষ করে স্থলবন্দর ব্যবহার করে পোশাকের পর এবার পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানির সুযোগ বন্ধ হওয়ার কারণে বাংলাদেশই বেশি ক্ষতির শিকার হতে পারে বলে বিশ্লেষকদের কেউ কেউ ধারণা করছেন।
বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স এসোসিয়েশনের ডিরেক্টর ও রাজবাড়ী জুট মিলসের চেয়ারম্যান শেখ শামসুল আবেদিন বলছেন, ভারতের নতুন সিদ্ধান্তের প্রভাব দেশের পাটশিল্পে কতটা পড়বে সেটি তারা বিশ্লেষণ করছেন।
“কাঁচাপাট রফতানি বন্ধ হবে হয়তো। তবে স্থলবন্দর না হলে নৌপথে কীভাবে রফতানি চালু রাখা যায় সে আলোচনা এর মধ্যেই শুরু হয়েছে,” বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন তিনি।
ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের (বিটিটিসি) সাবেক সদস্য ও বাণিজ্য বিশ্লেষক মোস্তফা আবিদ খান বলছেন, স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে বাংলাদেশি পণ্যের রফতানি বন্ধ হলে সেটি নৌপথে রফতানি করে পোষানো খুবই কঠিন বিষয় হবে।
ভারতের অন্যান্য রাজ্যে কাজ করা পশ্চিমবঙ্গের বাঙ্গালিরা ভয়ে বাংলা ভাষায় কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছেন। বাংলা বললেই তাদের বাংলাদেশি হিসেবে সন্দেহ করে হেনস্তা করা হচ্ছে।
সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়া বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুরের বাসিন্দা মোজাহের শেখ সংবাদমাধ্যমটিকে জানিয়েছেন, উত্তর দিনাজপুরের বিভিন্ন গ্রামের প্রায় ২৫০ জন মানুষ রাজস্থানে কাজ করেন। শুধুমাত্র বাংলা ভাষায় কথা বলার পর তাদের সবাইকে পুলিশ ৯ ঘণ্টা আটকে রেখেছিল। এরপর থেকেই তারা বাংলা ভাষায় কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছেন। বাংলার বদলে হিন্দিতে কথা বলছেন তারা।
মোজাহের শেখ বলেন, “মঙ্গলবার আমাদের আটক করা হয়। আমরা বাংলা ভাষায় কথা বলি এ কারণে আমাদের কয়েক ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এখন থেকে আমরা নিজেদের মধ্যে হিন্দিতে কথা বলছি। বিশেষ করে আমরা যেখানে কাজ করি। যেন মানুষ বুঝতে পারে আমরা বাংলাদেশি নয়, ভারতীয়।”
তিনি জানিয়েছেন, গত মঙ্গলবার অন্যদিনের মতো, তারা তাদের কাজে যান। ওই সময় পুলিশ এসে তাদের অম্বেকর ভবন নামে একটি কমিউনিটি হলে নিয়ে যায়। সেখানে তাদের পরিচয় দিতে বলা হয়।
মোজাহের বলেন, “প্রথমে তারা আমাদের কড়া রোদে দাঁড় করিয়ে রাখে। এরপর হলের ভেতর ঠেলে নিয়ে যায়”
হামিদুর রহমান নামে একজন বলেন, “আমরা আমাদের পরিচয় দিই। কিন্তু পুলিশ বলতে থাকে আমরা বাংলাদেশি, কারণ আমরা শুধু বাংলায় কথা বলি। আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলাম আমাদেরও আবার বাংলাদেশে পুশ-ইন করা হয় কি না।”
তিনি জানিয়েছেন, কয়েকদিন আগে তিন বাঙালিকে আলাদা রাজ্যে আটকের পর বিএসএফের হাতে তুলে দেওয়া হয়। যাদের বাংলাদেশি বলে বাংলাদেশে পুশ-ইন করা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে যখন জানা যায় তারা ভারতীয়, তখন তাদের ফিরিয়ে আনা হয়।
বাংলাদেশ ও জার্মানির মধ্যে বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরও গভীর ও বহুমুখী হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এবং ঢাকায় নিযুক্ত জার্মানির বিদায়ী রাষ্ট্রদূত আখিম ট্রোসটার।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সৌজন্য সাক্ষাতে এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন তারা। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সাক্ষাৎকালে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বাংলাদেশের সঙ্গে জার্মানির দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠ ও বহুমাত্রিক সম্পর্ক শক্তিশালী করতে রাষ্ট্রদূতের অবদানকে আন্তরিকভাবে স্বীকৃতি দেন। বিশেষ করে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার এবং চলমান সংস্কার কার্যক্রমে জার্মান সরকারের অব্যাহত সমর্থনের জন্য তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
বৈঠকে দু’দেশের মধ্যে কানেক্টিভিটি, বাণিজ্য, জলবায়ু পরিবর্তন ও মানবাধিকারসহ আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে গঠনমূলক আলোচনা হয়। উভয়পক্ষই আন্তর্জাতিক শান্তি, নিরাপত্তা এবং টেকসই উন্নয়নে নিজেদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।
রাষ্ট্রদূত আখিম ট্রোসটার বাংলাদেশ সরকার এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে যে আন্তরিক সহযোগিতা ও আতিথেয়তা পেয়েছেন, তার জন্য গভীর কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি বাংলাদেশের জনগণের গণতান্ত্রিক চেতনা, জাতীয় উন্নয়ন এবং স্বাধীনতা ও সমৃদ্ধির পথে অব্যাহত অগ্রযাত্রার প্রশংসা করেন।
দুই পক্ষই আশা প্রকাশ করেন, দু’দেশের মধ্যকার সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরও শক্তিশালী ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে নতুন নতুন সহযোগিতার ক্ষেত্র উন্মোচন করবে।